গুচ্ছ কবিতা
সন্ধ্যারাগ
পথে পথে এই এতো রঙ
ধরে থাকা আনন্দ কিরাত
এসো- বসো, রান্নার দুপাশে
শিবের আগুনে পোড়া হাত
পথে পথে লাল আলো দেখে
শিউরে ওঠে তোমার দুচোখ
যারা রোজ প্রতিশ্রুতি ভাঙে
তাদেরও কি অন্নপূর্ণালোক
ঢেলে দেয় আলোর পেয়ালা
পথে দেখি- কুকুরের জিভ
চেটে তুলছে আয়ুভরা থালা
দেহপট
যতো তাপ, যতো দেহ, ওড়ে ফুল্কি ওড়ে গন্ধরস
যতো ঠাণ্ডা, যতো নারী, কাম থেকে কামের পরশ
যতো পাখি, যতো পালকের মেঘভরা অভিমান
যতো বর্ষাগম, যতো - বিন্দু বিন্দু শিশিরের গান
সে সবই ক্ষণিক নয় বাতাসের সচল নিয়ম
চোখ থেকে অন্য চোখে ফেরি করা লেশমাত্র ওম
যতো ঘুম, যতো স্বপ্ন, যতো জাগতিক বিস্ফারণ
যতো চোখ যতো দৃশ্য, যতো সব গোপনে মরণ
যতো ডাক, যতো খোঁজ, যতো ঠোকরানো রাত্রিবেশ
যতো প্রেম, যতো আমি, যতো বোকা আমার নির্দেশ
সে সবই রাত্রির মতো সারাদিন বয়ে চলা রঙ
অন্ধেরও ধুনকি আছে, আছে কিছু ধূসর অহং
যতো তীক্ষ্ণ, যতো স্বর আদিগন্ত খোঁজার পিপাসা
যতো ভোর, যতো সূর্য, যতো দুনিয়াদারির ভাষা
যতো নম্র, যতো তেজী, মুহূর্তের দারুণ চালাকি
যতো মূর্তি, যতো স্থির, মুখে মুখে পৌঁছে দেওয়া
ক্ষীর
যতো গুপ্ত, যতো শোক- বর্ষাধ্বনি রেখেছি দুহাতে
যতো দৃষ্টি, যতো পাওয়া- ততো জীর্ণ অবলা আঘাতে
তবু বাঁচি, জানি না সে নিদারুণ বেঁচে থাকা কতো
বাঙময়, অথচ খুব যুদ্ধহীন প্রপঞ্চপিড়ীত !!!
তথ্য
তথ্যের বয়ান মৃত, অভিনব মৈথুনের দৃশ্যে
উঠে আসে হিংসারাত, উঠে আসে নিকাব পরানো
রূপবতী, জ্বলে ওঠে নীল আলো; যদিও জানি সে
আমাকে বিভ্রান্ত করে খুঁজে নেবে শিকারিকে কোনও !
ঘুম ছেড়ে উঠে বসি, নিজেকে, তথ্যের অন্ধকারে
খুঁজে, দেখি- ধর্মের মায়ার ঢাকা ফুল-বেল-পাতা
ঝরে যাচ্ছে একবিংশ শতকের ঘুমের ভিতরে ,
পারদের মতো ঘন মানুষের চোখ, সাথে তার
অসীম গাম্ভীর্যে- ভয়ে ভয়ে পাখি উড়ে যায় একা
গান নেই, হাওয়া নেই অদ্ভুত শৃঙ্খলভরা মন
সুনিপুণ স্নিগ্ধ চাঁদ, কীসুন্দর পরিপাটী আঁকা
তবুও কীভাবে যেন ঘটে যায় মৃদু বিস্ফোরণ
প্রতিদিন ঘুমের ভিতরে উঠে আসে আবছা ঘর
অসংখ্য তথ্যের মাঝে ফুটে উঠি ধূসর ধূসর
No comments:
Post a Comment