চতুর্দশী
ফুলের গন্ধ তাকেও দিয়েছি কেন ?
সোনালি ও-হাতে অমন বরণডালা
কাল বসন্তে চতুর্দশীর রাতে
আমি পরিয়েছি তাকে করবীর মালা
বোধের আগুনে উষ্ণতা পেলে প্রাণে
দেখার দুচোখে অতীন্দ্রিয়ের নীল
প্রেমের স্পর্শে গায়ত্রীধ্বনি পেলে
চিনলে আকাশে অবাক শঙ্খচিল
এত মন এত প্রাণ এত বোধ নিয়ে
কবিকে শোনাবে সত্যের জয়গান
তোমার দুহাতে সঁপে দেব প্রাণ বলে
আমার দুহাতে সঁপেছ তোমার প্রাণ...
অবশেষ
আকাশ পাতাল খুঁজেছি বৃষ্টি চোখে
হৃদয়-ক্ষরিত রক্তে ও অভিমানে
প্রতিশোধসুখ -- তা যদি কিছুটা পাই
ক্ষতবিক্ষত আমার ক্ষুদ্র প্রাণে
তবু অশোভন বদলা নেবার স্পৃহা?
আমার ঠাকুর সখেদে করেছে মানা
বহু বেদনায় ঘুম থেকে উঠে দেখি
আহত শালিখ রোদে শুকোচ্ছে ডানা
মুক্তি-পিপাসু মরমে ও চেতনায়
অনেক রক্তে তোমাকে নিয়েছি চিনে
তুমি তো শেখালে ক্ষমা, শুধু ক্ষমা, থাকে
ভালোবাসাটির ক্ষতবিক্ষত দিনে...
সন্ধ্যাপূজা
পদ্মার ঘাটে সন্ধে নামল বলে
নেমেছে বিষাদ আমাদের সভাঘরে
ছায়ামণ্ডপে এ কোন সন্ধ্যারতি --
পূজারিনিটির শঙ্খে রক্ত ঝরে ?
তবু ভালোবাসা উন্মুখ হয়ে থাকে
রাত্রির ঘোড়া পাঠিয়েছি তোর কাছে
সব যুদ্ধের হয়ে যাবে অবসান
যেখানে প্রেমের মহাবাণী লেখা আছে
ওপারে ঘাতক ছুঁড়েছে শাণিত তির
বুক ভেসে গেছে এপারে জাহ্নবীর ...
সাগরবালিকার কাছে
সাগর, তোমার জঠরভরা জলে
লক্ষ প্রাণের প্রবল আনাগোনা
সাগর, আমার তীক্ষ্ণ ছুঁচের রেখা
জঠর জুড়ে উল্কি করে বোনা
সাগর, তোমার সূর্য ফোটা বুকে
আঠার মতো আগুন চুঁয়ে পড়ে
সাগর, আমার বুক জোড়া হিমানি
ঘরের পাখি ক্ষণিক অগোচরে
বিমুখ হয়ে ফেরার পথে পাড়ে
ব্যর্থ রাতের অসহ্য গঞ্জনা
তখন আমার শরীর থেকে গ্লানি
চলকে পড়ে, তুমি তো জানো না
সাগর, আমি অঙ্গহীনা, সঙ্গ শুধু স্মৃতি
সাগর, তোমার জলের নিচে অশ্বখুরাকৃতি
...
অপূর্ব
ReplyDelete