Saturday 27 January 2018

গৌতম ঘোষদস্তিদার





সমুদ্রের কবিতা
[ঋণ : উৎপলকুমার বসু]


সমুদ্র থেকে ফিরে এসে আমি প্রতিবার আঁশটে-ঢেউ লিখতে চেয়েছি
কিন্তুবারবার তরঙ্গগুলি কাগজে আছড়ে পড়েছে অবিকল মৃত্যুর মতো
কল্লোলের সঙ্গে যে মৃত্যুর  অন্ত্যমিল দেওয়া যায় নাতা নয়
তবুআমরা তো ঢেউ  তার উত্থানপতনে চিরদিন যৌনতাই লিখেছি
কিন্তুআপনার সাগরকাব্য বরাবরই আলাদাবিদায়ের মতো কুহকী
আপনি সমুদ্রের নীলিমাবিথারেসমুদ্রমন্দিরে দূরবীক্ষণের সঙ্গে
অনবদ্য আলাপচারিতা চালিয়েছিলেন সেই নিরুপায় বালিয়াড়িতে
আরসিআইটি-রোডে আপনাকে দেখেছি সমুদ্রসফেন পেরিয়ে
ঢোলা-পায়জামা আর ফতুয়ার বেশে একটি নিপাট-পাঁইট কিনে
ফের রাস্তা পেরিয়ে শ্রমণের মতো শান্তভাবে গাড়িতে উঠে যেতে
গাড়িতে বসে পাঁইটবেষ্টিত খবরকাগজের ছিন্ন-বাক্যগুলি লক্ষ করে
অঘ্রানের সন্ধেবেলা আপনি আবার সেই তেষট্টির নিরক্ষর বেশ্যাদের
পত্রাবলি-মুসাবিদা সেরে নিতেন মনে-মনেআর সেইসব বাক্যাতীত
সারাৎসারের ভিতরে গড়িয়ে আসত সাদাকালো ঢেউ বা ফেনারাশি
কফিহাউসের টেবিলে আপনার ঠোঁটে লেগে থাকত অবিমিশ্র-কফির মতো
একটি প্রসন্ন হাস্যরেখাঅধিকাংশ বিকেলবেলা পাদ্রিরা এমন হাসেন
(আমি লক্ষ করেছিগোধূলিপীড়িত দূর-শহরের সচরাচর কবরখানায়)
বিপরীতে পার্থপ্রতিমের ঠোঁটে দেখেছি দুরূহ-জ্যোতিষীর রহস্যবিন্যাস
কে আরিস্ততল আর কে প্লেতোআমরা তা বুঝে উঠিনি কোনওদিনই
আমিউৎপলদাসারাটা সন্ধ্যা টেবিলে বসে আপনার ঢেউ ভাবতাম
আপনি নিশ্চয়ই গতজন্মে কোনও  প্রশান্ত-নুলিয়া ছিলেনঅথবা ধীবর
 না-হলে আপনার বই খুললেই এত ঢেউ আছড়ে পড়ে,বালি ওড়ে,আজও!

No comments:

Post a Comment

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"কেউ ছালটা ছাড়িয়ে নিয়ে সিদ্ধ করছে। পাতাগুলো ছিঁড়ে শিলে পিষছে কেউ। কেউ বা ভাজছে গরম তেলে। খোস দাদ হাজা চুলকুনিতে লাগাবে। চর্মরোগের অব...