তিনটি
কবিতা
রৌদ্র
ছড়ানো উঠোন
ও শীতের
কবিতাগুচ্ছ
অধিক
আড়াল ছিল
যাতে
সম্মুখ
খোলা আছে
যার
প্রেরণার
মতো মৃত্যুতে
জন্মও
প্রেমহীনতার
নিভন্ত
মোমবাতি তাই
আঁধারের
মতো এক
ঘরে
আকণ্ঠ
ভরা বেদনায়
আত্মাকে
ভালোবেসে মরে
সন্ধেতে
ফুটে ওঠা
ফুল
ভোর
হতে ঝরে
ঝরে পড়ে
প্রবাসী
প্রেমের যত
ভুল
দমকা
বাতাস পেলে
নড়ে
জীবনের
ঘরে বসে
কবি
মুখোমুখি
চেয়ে থাকে
রাতে
যে
রাত এঁকেছে
তার ছবি
ক্যানভাস
ভরা বেদনাতে
তবু
বলি, এই
পোড়া ঘরে
যুবতী
জীবন কেন
বাঁচে ?
প্রতিরাতে
ঘোর লাগা
জ্বরে
মানুষ
বানিয়ে তোলে
ছাঁচে
খ'সে
যাবে পাতাগুলো
ধূসর
শীতের বুকে
জানি
শূন্যে
উড়বে ছাইধুলো
শরীর
মনের টানাটানি
যাকে
তুমি বলো
মায়াজল
যার
নামে বেঁধেছ
গাঙুর
সে
কেমন অমৃতফল
?
কবিতাগুচ্ছের
আঙুর ?
বিদ্রুপ,
নাকি বিভীষিকা
?
আলাপে
আলাপে বাড়ে
আলো
লেলিহান
হোক তার
শিখা
বিদ্যুতে
যারা জন্মালো
|
কাগজের
যুবতী
কাগজের
শরীর—বাতাসে
বুনেছে সমুদ্র
ফেনার ঢেউ
মৃত্যুগুলো
সাদা—পাংশু
শরীরে বাড়ে
শ্যাওলা—চেরা
চেরা
জিভ
নিয়ে এগিয়ে
এসেছে মুখের
কাছে—অন্ধরাতে
তার
ক্ষিপ্র আঙুলে
ভরা দুই
হাত—চেপে
ধরে
দুই
চোয়াল—মেঘের
মতো টসটসে
জলধি
তার
ঠোঁটে—যেন
বুকের ভিতরে
বেঁধেছে মানববোমা
।
আহত
সর্বস্ব—
মেরুদণ্ড দিয়ে
ঝরে হিমরক্তস্রোত—
বাদামী
বৃন্ত হয়ে
ওঠে শ্মশানের
মাটি—তার
চামড়ার
নীচে কামড়ে
ধরে ঘুণপোকা—দুধের
বাটি
চলকে পড়ে—হঠাৎ
ঝড়ে কিংবা
শরীরপোড়া
আগুনে
নষ্ট হয়
সন্ধ্যাতারার
মতো যুবতীটি
।
আয়নার
সামনে খুলে
রাখে কালো
ব্রা—তোশকের
নীচে
তার বরফজমা
শরীর পোড়ে—আমার
মৃত
আঙুল নিয়ে
খেলা করে
তার শিউরে
ওঠা
ঠোঁট—বুক
ঘামে—স্তনের
শীর্ষ থেকে
বেড়ে ওঠে
গাছ—পরবাসী
পুরুষের মতো
প্রতিটি রাতে
আমি
জড়িয়ে
থাকি তাকে—একেকটি
নিসর্গ
রাত
ভেসে যায়
তার শরীরী
অববাহিকায়
।
জড়িয়ে
থাকি নারীমাংস—সেও
খুবলে খায়
পুরুষের
শাঁস—ঝলসে
ওঠে ভোরের
আলোয়
নরকঙ্কাল—তার
ব্লাউজের নীচে
সাঁতরে বেড়ায়
মাছ—হাঙরের
কানকো ভাসে
ত্রিবলীর গভীরে
ন্যাংটো
দেহের ঘাম
রুমালে মুছে
ধরায় বিড়ি
মদের
গ্লাসের একেকটি
চুমুকে—পেটে
পুরে নেয়
লবনসাগর ।
রক্ত
ফুটতে থাকে
যোনিতে জমানো
কয়লার আঁচে
।
শরীরের
ব্যারিকেড
পুঁজ
,রক্ত, স্বেদ,
জমা ভীমরুলের
চাকে
তুমি
জমিয়েছ রাতের
রস, উৎকণ্ঠা
মাটি
দিয়ে গড়েছ
স্টেশনগুলো
।
এখন
নিজের শরীরে
তুমি আর্তনাদ
ঢালো
গরম
তরলে ভাসাও
ঊরুদেশ, বস্তিদেশ
বুকেতে
শ্বাসনালী,
গাছপালা নেই
ঠাসা
মরুভূমি, ধূ-ধূ
বালি, কুয়োতলা
হয়ে ওঠে
বেশ্যাপাড়ার
বাড়ি, তুমিতো
গুটিভাঙা কীট
তুমিতো
আঠালো রাতের
বিষ, তুমি
নারী ।
বরফের
টুকরো ঝুলিয়ে
রাখো স্তনে
গলুক
ধীরে, ভিজে
আসুক অন্তর্বাস
নইলে
ঘাসেরা আবার
গজিয়ে উঠবে
তোমার
শরীরে, গর্তে
ঢুকবে ময়াল
আঁশটে
গন্ধে ভরে
যাবে বাড়ি—
এমনিতে
গর্ভ ভর্তি
এত মেঘ
এত কালো
লৌহ
ভেঙে ঝরে
লালা বিদ্যুৎ
চমকায়
তোমার
নগ্ন মোহনায়
।
সমস্ত
পুরুষ পুরেছ
পেটে, বিক্ষুব্ধ
অনুসন্ধিৎসু
নজরে খাও
একরাশ
শরীর,
প্রচণ্ড উত্তাপে
ফাটে গ্রহ-তারাপুঞ্জ
নিঃশ্বাসে
ওড়ে পরাগ,
দেহসাগরে
ভাসে
মৃগনাভি, তাই
প্রতিটি সুরার
গ্লাসে
চলকে
ছিটকে পড়ে
পোশাকহীন তোমার
যৌবন ।
কি
দেখব আড়ালে
? যার জন্যে
টেনে
আনো ঘরে,
পর্দা ফ্যালো
জানলায়
ছিটকিনি
তুলে পিঠ
দিয়ে দাঁড়াও
দুয়ারে
খুলে
দাও বন্দীশালার
মতো বুক,
পলাতক
কয়েদীর
দল এককালে
খুবলে খেয়েছে
মুখ
এখন
সেইসব অতীতের
শিরা, উপশিরা,জালক
গা
থেকে পালক
খসার মতো
খসিয়ে দাও
শীতের
গরমে নতুন
প্রেমিকের
ভাপে
বাষ্প
হয় ক্ষুধা,
হ্যাঁ—ক্ষুধাই
বলব
যে
শরীর একদিন
হবে মা
, কেন তা
এতদিন
চুন-লবনের
ভরা খাদে
পাথর হয়ে
ছিল
কেন
বাদমগাছের
মতো এতদিনে
গর্ভবতী হয়নি
পান
পাতা তোলেনি
দুহাতে, ধনুকছিলার
মতো
ক্ষতবিক্ষত
শিরদাঁড়া নিয়ে
শুয়ে ছিল
পুরুষ
বুকের ’পরে
এতদিন এতরাত
ধরে ।
বেশ,
তাহলে দুহাতে
খোলো সিক্ত
বাসবী
দেখাও
যত্ন করে
তন্বী মেয়ের
বুক, তীব্র
অসুখ
কফির
মতো গাঢ়
বাদামী মধ্যবিন্দু
, কাজলের
সমস্ত
কালো জমাও
তারারন্ধ্রে
, নাড়ি কেটে
শূন্য
করো জরায়ু,
সেখানে চাঁদের
উৎসব
শোকে
বিসর্গ আলো,
তাপ , পাপ
সেখানে
যুদ্ধকালীন
ঘোড়াদের আস্তাবল—
ছিঁড়ে
খুঁড়ে খাই
শাকপাতা, তৃণভোজীর
দাঁতে
মাড়িতে
রোজ যে
লালসা ফুটে
ওঠে তা
মাখাই
তোমার
শাড়িতে , ঘৃণ্য
অতিঘৃণ্য অপরাধী
আমি
দুচোখে
খড়কুটো জ্বলে
, যখনই পোড়া
গা পোড়া
দুহাত
নিয়ে ছুঁয়েছি
তোমার বুক-পেট-পিঠ
শুকিয়ে
খসখসে হয়েছে
চামড়া, রাতের
বারুদজমা
রাজপথে
এসো , হাত
ধরাধরি করে
ব্যারিকেড
ভেঙে
পুলিশের
চোখে ধুলো
দিয়ে পালাই
আমরা ।
No comments:
Post a Comment